শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪, ০৬:২৯ অপরাহ্ন

যে ডিসিরা ছাত্রলীগের নেতা ছিলেন

যে ডিসিরা ছাত্রলীগের নেতা ছিলেন

বিশেষ প্রতিনিধি : বিগত সরকারের ঘনিষ্ঠ জেলা প্রশাসকরা (ডিসি) এখনো স্বপদে বহাল রয়েছেন। তাদের কয়েকজনের বিরুদ্ধে রয়েছে বিস্তর অভিযোগ। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনাও ঘটেছে কিছু কিছু ডিসির প্রত্যক্ষ মদতে, যারা ছাত্রজীবনে ছাত্রলীগের কর্মী অথবা সরকারের বিভিন্ন সময়ে সুবিধাভোগী। ইতোমধ্যে আবার কেউ কেউ বিএনপি-জামায়াত নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল কয়েকজন কর্মকর্তা এসব তথ্য জানিয়েছেন। তারা বলছেন, এই জেলা প্রশাসকরা ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর পলাতক সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগ-ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়মিতভাবে যোগাযোগ রাখছেন। জেলাগুলোতে ছাত্র-জনতা প্রতিবিপ্লব ঠেকাতে কী ধরনের প্রস্তুতি রেখেছেন এবং পদক্ষেপ নিচ্ছেন—তা জানিয়ে দিচ্ছেন।

এতে করে জেলাগুলোতে অস্থিরতা তৈরি হচ্ছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জেলা প্রশাসক হিসেবে দায়িত্বরতদের অনেকেই এর আগে কোনো না কোনো মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীর পিএস হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। মন্ত্রীদের সুপারিশেই ডিসি হিসেবে নিয়োগ পেয়েছিলেন তারা। ফলে সেই ‘দায়বদ্ধতা’র জায়গা থেকেও তারা আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের সহায়তা করছেন। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, গত ১৬ বছরে জেলা প্রশাসক নিয়োগের প্রধান যোগ্যতা হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছে প্রার্থীর রাজনৈতিক মতাদর্শ।

ছাত্রজীবনে যারা ছাত্রলীগের রাজনীতি করতেন তাদেরকেই জেলা প্রশাসক হিসেবে নিয়োগের জন্য বিবেচনা করা হয়েছে। প্রার্থীদের রাজনৈতিক মতাদর্শ কয়েক স্তরে তদন্ত করা হয়েছে। সরকারের গোয়েন্দা সংস্থা, ডিজিএফআই-এনএসআই ছাড়াও উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে দিয়ে প্রার্থীর রাজনৈতিক মতাদর্শ যাচাই-বাছাই করা হয়। এরপর জেলা প্রশাসক নিয়োগ দেয় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। জানা গেছে, দিনাজপুর হাজী মোহাম্মদ দানেশ কৃষি কলেজ (বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়) ছাত্রলীগের একসময়কার সাধারণ সম্পাদক আবু নাছের ভূঁঞা বর্তমানে নাটোরের জেলা প্রশাসক। ছাত্রলীগের প্রভাব খাটিয়ে তিনি সবসময় তটস্থ রাখতেন অফিসের কর্মকর্তা কর্মচারীদের।

তার বিরুদ্ধে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে অভিযোগ এলেও রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে সব ধামাচাপা দিয়েছেন। বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারের ২৫ ব্যাচের এই কর্মকর্তা এর আগে সাবেক যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেলের একান্ত সচিব ছিলেন। নাটোরে দায়িত্ব পালনের সময় বিগত সরকারের শেষ দিন পর্যন্ত তিনি সবার সঙ্গে রাজনৈতিক নেতার মতো আচরণ করেছেন। আওয়ামী লীগের পতনের পরের দিন দুপুরে বিএনপি, জামায়াতের সঙ্গে মতবিনিময় সভা করেছেন।

শেয়ার করুন

Comments are closed.




দৈনিক প্রতিদিনের কাগজ © All rights reserved © 2024 Protidiner Kagoj |